সালামের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক
সালামের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক! শান্তির ধর্ম ইসলাম আর ইসলামে রয়েছে সকল প্রকার দিকনির্দেশনা মানব জীবনের সকল সমাধান নির্ধারিত রয়েছে ইসলামে এবং ইসলামের শান্তির প্রতীক গুলোর মধ্যে রয়েছে সালাম এবং সালাত।
একজন মুসলমান অপর মুসলমানের সাথে দেখা সাক্ষাতের প্রথমেই আদায় করার দিকনির্দেশনা আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ দিয়ে গিয়েছেন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর সুন্নত এর মধ্যে প্রধান সুন্নত হচ্ছে সালাম।
সালাম হলো শান্তি্ প্রশান্তি, কল্যাণ দোয়া আরাম এবং আনন্দ. প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর সালাম এর উপকারিতা সম্পর্কে এবং তরিকা জেনে রাখা অত্যান্ত জরুরী।
দেখুনঃ যাদের সাথে বিয়ে হারাম বা মাহরাম কে কে জেনে নিন
অনেক উপকৃত রয়েছে বিভিন্ন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ…
শান্তির বার্তা পৌছায়ঃ আল্লাহতালা নিজে বলেন, অতঃপর যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ করবে তখন তোমাদের আত্মীয় স্বজনের প্রতি সালাম বলবে এটা আল্লাহর কাছে থেকে কল্যাণময় ও পবিত্র দোয়া এমনিভাবে আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝে নাও,( সূরা নূরঃ ২৪;৬১) ইনশাআল্লাহ
সালাম প্রদানকারী ব্যক্তির আল্লাহ জিম্মাদার হনঃ
প্রিয় রাসূল সাঃ হাদিসে বর্ণনা করেন,
আল্লাহ তায়ালা তিন শ্রেণীর লোকের জিম্মাদার হন তাদের মধ্যে প্রথম হলো যে ব্যক্তি সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে অর্থাৎ ঘরে থাকা মা বাবা সন্তান স্ত্রী ভাইবোন ছোট-বড় যেই থাকুক না কেন তাদের সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করা আল্লাহ তালার বাড়িকে এবং ওই ব্যক্তিকে হেফাজত করেন ,সুবহানআল্লাহ(আদাব মুফরাদ-১০৯৮)
সালাম পরস্পরের মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ দূর করে ভালোবাসা সৃষ্টি করেঃ সালাম নামক এই শান্তির বাণীটি সামাজিক জীবনে এক বিশাল স্থান দখল করে আছে। এর মধ্যে লুকিয়ে আছে এমন এক আকর্ষণীয় চুম্বক শক্তি যা মনের সকল প্রকার দূরত্ব, মনের কালিমা ও অনৈক্য দূর করে সবাইকে কাছে এনে ভ্রাতৃত্ব ও ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে দেয়। এক মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের কতিপয় অধিকার রয়েছে।
সালামের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘এক মুসলমানের উপর অন্য মুসলমানের ছয়টি অধিকার তথা কর্তব্য রয়েছে। জিজ্ঞেস করা হল, হে রাসূল (স.)! সেগুলো কী কী? তিনি বললেন,
(১) যখন তুমি তার সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন তাকে সালাম দিবে।
(২) সে যখন তোমাকে দাওয়াত দিবে তখন তুমি তার দাওয়াত কবুল করবে।
(৩) সে যখন তোমার কাছে পরামর্শ বা উপদেশ চাইবে, তুমি তাকে সৎপরামর্শ দিবে।
(৪) সে হাঁচি দিয়ে যখন ‘আল-হামদুল্লিাহ’ বলবে তুমি তার হাঁচির জবাব দিবে।
(৫) সে যখন অসুস্থ হবে তখন তাকে দেখতে যাবে।
(৬) সে যখন মারা যাবে তখন তুমি তার সঙ্গী হবে’ (জানাযা পড়বে ও দাফন করবে)।
———বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৫২৫}
সুতরাং বুঝা গেল সালাম অপর মুসলমান ভাইয়ের একটি অধিকার।০ আরে এক্সপেক্টেদ ত কত
এছাড়াও আল্লাহ তা’আলা কারো সালামের জবাব উত্তমভাবে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন,
‘যখন তোমাদের (সালাম বা অন্য কিছু দ্বারা) অভিবাদন জানানো হয়,
তখন তোমরা তার চাইতেও উত্তম পন্থায় তার জবাব দাও, (উত্তমভাবে না হলেও) কমপক্ষে (যতোটুকু সে দিয়েছে) ততোটুকুই ফেরত দাও, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সব কিছুর (পুংখানুপুংখ) হিসাব রাখেন।’ {সূরা আন নিসা, আয়াত ৮৬}
আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম হতে বর্ণিত নবী করীম (স.) এরশাদ করেন,
‘হে মানবমন্ডলী! তোমরা সালামের ব্যাপক প্রচলন ঘটাও। ক্ষুধার্ত মানুষকে খাদ্য খাওয়াও। আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা কর। তুমি রাতে সালাত আদায় কর, মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে’।
হাশরের ময়দানে বিচার-ফায়ছালা হয়ে যাওয়ার পর ভাল কাজের জন্য একদল যাবে জান্নাতে আর মন্দ কাজের জন্য একদল যাবে জাহান্নামে {সূরা আল হাক্কাহ}। যারা অফুরন্ত নেয়ামত ভরা জান্নাতের অধিকারী হবে তাদেরকে ফেরেশতাগণ অভিবাদন জানিয়ে জান্নাতের দিকে নিতে নিতে বলবেন, ‘তোমাদের প্রতি শান্তি-শান্তি’।
আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘জান্নাতের প্রতিটি দরজা দিয়ে (তাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্যে) ফেরেশতারাও তাদের সাথে ভেতরে প্রবেশ করবে, (তারা বলবে, আজ) তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক, (দুনিয়ার জীবনে) তোমরা যে পরিমাণ ধৈর্য ধারণ করেছো (এটা হচ্ছে তার বিনিময়), আখেরাতের ঘরটি কতো উৎকৃষ্ট! {সূরা আর্ রা’দ, আয়াত ২৩-২৪}
স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা জান্নাতবাসীদেরকে স্বাগত জানাবেন, ‘পরম দয়ালু মালিকের পক্ষ থেকে তাদের (স্বাগত জানিয়ে) বলা হবে, (তোমাদের ওপর) সালাম (বর্ষিত হোক)’ {সূরা ইয়াসীন, আয়াত ৫৮}
অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘(উষ্ণ অভিবাদন জানিয়ে) তার রক্ষী(ফেরেশতারা)-রা তাদের বলবে, তোমাদের প্রতি সালাম, তোমরা সুখে থাকো, চিরন্তন জীবন কাটানোর জন্যে এখানে দাখিল হয়ে যাও!’ {সূরা আঝ্ ঝুমার, আয়াত ৭৩}
আরোঃ ব্যাংক একাউন্ট নিরাপদ রাখতে যা করবেন (গুরুত্বপূর্ণ)
অহংকার পতনের মূল। গর্ব-অহংকার যেমনি মানব জীবনকে মারাত্মক ধ্বংসের দিকে ধাবিত করে তেমনি বিনয়, ভদ্রতা-নম্রতা মানুষকে উন্নতির চরম শিখরে আরোহণে সাহায্য করে। অহংকারী দাম্ভিক ব্যক্তিকে যেমন কেউ পছন্দ করে না, তেমনি তাকে আল্লাহও ভালবাসেন না। আল্লাহ বলেন, ‘(আল্লাহর) যমীনে কখনো ঔদ্ধত্যপূর্ণভাবে বিচরণ করো না; নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক উদ্ধত অহংকারীকেই অপছন্দ করেন।’ {সূরা লোকমান, আয়াত ১৮}
অন্যদিকে রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যার অন্তরে বিন্দুমাত্র অহংকার থাকে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না’। {মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮} সুতরাং এ অহংকার নামক মারাত্মক ব্যাধি থেকে বাঁচতে চাইলে, আল্লাহর ভালবাসা পেতে হলে এবং জান্নাত লাভের বাসনা করলে সালামের ব্যাপক প্রচলন ঘটাতে হবে।
প্রথমে সালাম প্রদানকারী গর্ব-অহংকার থেকে যেমন মুক্ত থাকে তেমন বিনয়ীও হতে পারে। বিনয় আল্লাহর গযব হতে রক্ষা করে তাঁর রহমতের অধিকারী বানায়। অহংকার ব্যক্তিকে কলুষিত করে আর বিনয় মানুষের জীবনকে পবিত্র করে। অহংকার শত্রুতা সৃষ্টি করে আর বিনয় শত্রুকেও পরম বন্ধুতে পরিণত করে। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত অহংকার নামক মারাত্মক ব্যাধি থেকে বাঁচার জন্য সালামের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়া।